বুধবার, জানুয়ারী ২০, ২০১৬

রুটিন মাফিক চলার ৩টি সহজ উপায় যা আপনার শরীরের সুস্থতা ও সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে

কিছু ব্যাপার আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ , কিছু ব্যাপার অত্যাবশ্যক । আমাদের বুঝতে হবে কোনটা কাজটা আমাদের আগে করা উচিত কোন কাজটি পরে ।তাই এই লেখাটি আশা করি আপনাদের সাহায্য করবে । 


১। সকল অর্ধসমাপ্ত কাজের সমাপ্তি করা যে কোন ভাবেই হোক


বর্তমান সময়ে দেখা যায় যে আমরা সহযেই একটি কাজের উপর থেকে মনযোগ হারিয়ে ফেলি । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো এর মধ্যে অন্যতম যারা আমাদের দৈনন্দিন কাজের উপর প্রভাব ফেলে । আসলে আমরা চাই যে সব গুলো চিঠি , ইমেইল এবং দৈনন্দিন কাজের তালিকার কাজ একসাথেই করতে । কিন্তু এসব যোগাযোগ মাধম্যের কারনে হাতের একটা কাজ শেষ করে আরেকটা কাজ শুরু করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় । কিভাবে ? ধরুন …
  • আপনি একটি রিপোর্ট লেখা শুরু করেছিলেন । কিন্তু এর ফাকে ফাকে ফেসবুক , ইউটিউবে আপডেট চেক করতে করতেই আপনার লেখাটা আর শেষ হলো না । অথচ আপডেট চেক করার চেয়ে কিন্তু রিপোর্টটি তৈরী করা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো ।
  • আপনি একটি দৈনন্দিন খাবারের তালিকা তৈরী করলেন । কিন্তু দু’দিন বাদেই কোথাও পড়লেন যে ঐ ভাবে খাওয়া দেওয়া করলে তাড়াতাড়ি ওজন কমিয়ে একই রকম স্বাস্থ্য ধরে রাখা সম্ভব । আপনি তাই আগের তালিকা বাদ দিয়ে নতুন ভাবে শুরু করলেন । কিছুদিন বাদেই দেখলেন যে এটা ভালই কাজ করছে ! তাই আবার খোজা শুরু করলেন আরো ভালো কি পাওয়া যায় ।
  • দেখা যায় কারো সাথে কথা বলছিলেন , এরই মাঝে একটা মেইল আসলো । আপনি কথা বলা থামিয়ে মেইল দেখায় মগ্ন হয়ে গেলেন ।

এইভাবেই দেখা যায় আমাদের অনেক অর্ধ সমাপ্ত কাজ থেকেই যায় । একটা সময় দেখা যায় এই অর্ধ সমাপ্ত কাজ গুলোই যতটা না সময় লাগার কথা তার চেয়ে বেশি সময় লেগে যায় । ফলাফল হিসেবে  দেখা যায় যে ছুটির আগে আপনাকে এই কাজগুলোই তাড়াহুড়োর মধ্যে করে ফেলতে হচ্ছে । ফলে কাজগুলো সুন্দর করে সম্পন্ন করেতে পারছেন না । অনেক গুরুত্বপূর্ন ব্যাপারও হয়তো খেয়ালও করতে পারেননি । এর জন্য পরবর্তিতে ভুগতে হতে হয় ।


শুধু মাত্র একটি কাজের উপরই একই সময় মনোযোগ দিন ।


এই জন্য প্রথমেই দিনের একটা অংশ গুরুত্বপূর্ন কাজ গুলোর জন্য আলাদা করে ফেলুন । ঐ সময় যেখানে কাজ করবেন , তার আশেপাশেও ফোন রাখবেন না এবং ফেসবুক , মেইল ইত্যাদি একদম বন্ধ করে রাখুন যেন এগুলো জ্বালাতন করতে না পারে ।

এসব যোগাযোগ মাধ্যম গুলো আপনার কাজে সবসময়ই ব্যাঘাত সৃষ্টি করে থাকে । তবে কাজ শেষে অবশ্যই ফোন ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যম গুলো ঘুরে আসবেন । কারন অনেক গুরুত্বপূর্ন কাজ এর মধ্যমেও এসে পড়তে পারে । এভাবেই এসব থেকে কিছুটা সময় দূরে থেকে আপনি সহজেই আপনার অর্ধ-সমাপ্ত কাজটি সমাধা করতে পারেন ।



২। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আগে করুন ।



দ্বিধা দ্বন্ধ লেগেই থাকবে জীবনে । এবং তা আপনার সময়ও প্রচুর অপচয় করাবে । আপনার ইচ্ছা শক্তিকে দমিয়ে রাখে এই দ্বিধা দ্বন্ধ । তাই দিনের শুরুতেই আপনাকে প্রথমেই একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে ।
সত্যি বলতে কি , আমার কাজের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে আমি সহজেই দমে যাই , আমার ইচ্ছে শক্তি অনেক কম এবং সহজেই ভেঙ্গে পড়ি । তাই কোন কাজটা সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ তা বের করার চেষ্টা শুরু করলাম এবং মনে প্রানে তা করা শুরু করলাম । যদি দেখতাম যে আমার একটা প্রতিবেদন লিখতে হবে আজই , তখন আমি সকালে যত তাড়াতাড়ি পারি এক গ্লাস পানি খেয়েই লেখা শুরু করে দিতাম । তাই , যদি কোন কঠিন কাজ থাকে তা অবশ্যই শুরুতেই শেষ করে দিন । সারাটা দিন নিজেকে অনেক হালকা লাগবে ।
কিন্তু যদি গুরুত্বপূর্ণ কাজটি প্রথমেই না করে অন্য কোন সময়ের জন্য রেখে দেন , তবে দেখা যাবে ঐ দিনটা ঐ কাজের চিন্তাতেই নষ্ট হচ্ছে । তাই যত দ্রুত সম্ভব দিনের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ কাজের সমাপ্তি করুন , যদি দিনটার কোন পরিকল্পনা না ও থাকে এবং দিন শেষে একটি প্রশান্তিময় ঘুম পরের দিনের জন্য আপনাকে তৈরী করে দিবে ।


৩। সময়মাফিক চলতে হবে , লক্ষ্য সীমিত করে হলেও


সময়মাফিক চলাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । তাই নিজেকে সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে রাখতে হবে , লক্ষ্যের সাথে না । গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সময়মাফিক করলেই বেশি ভালো হয় । যদি এমন হয় “আজকেই শেষ সময় “ তবে তা ভিন্ন কথা ।
যখন আপনি এভাবে দিনের পর দিন একই ভাবে সময়মাফিক কাজ করে যাবেন , দেখবেন চাপ অনেকটাই কম থাকবে । সময়মেনে কাজ করাটা সত্যিকার অর্থেই একেবারে একটা কাজ করে ফেলার চেয়ে সহজ । সাধারনত কাউকে তার কর্মপরিকল্পনা জিজ্ঞাস করুন , দেখবেন  যে সে হয়তো বলবে যে আমি এই এই দিন কাজ করি এবং আমি আমার কাজ কখনই শেষ করতে পারি না । কারন তার কর্মপরিকল্পনা সে কল্পনার মত করে করে । আসলে কর্মপরিকল্পনা করতে হবে বাস্তবতা বুঝে । আপনার কোন কাজ কখন গুরুত্বপূর্ন , কোনটা কখন করলে সুবিধা হবে এই সব পরিকল্পনা করে আগাতে হবে । বুঝতে হবে আপনার কাজের গুরুত্ব ও সেই রকম গুরুত্ব অনুসারেই সাজাতে হবে দিনের কর্মপরিকল্পনা । তা না হলে আপনি বিফল হবেন ও সময়মাফিক কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছেতাই ভাবে কাজ করা শুরু করবেন । যা আপনার লক্ষ্য পৌছাতে বাধা প্রদান করবে । তাই আপনার প্রাথমিক লক্ষ্যই থাকতে হবে যে আপনি যে করেই হোক আপনার যেই কর্মপরিকল্পনা রয়েছে তাতে অটুট থাকবেন ।
এই ধরুন , আজকে চিন্তা করলেন যে আপনি আগামীকাল ঘুম থেকে উঠে পরিস্কার হয়েই বের হবেন এবং সকালে দৌড়াবেন , ব্যায়াম করবেন । কিন্তু দেখা গেলো কি ! আপনি সারা রাত ল্যপটপ নিয়ে পড়েছিলেন , ঘুমালেন দেরী  করে , উঠলেন দেরী করে । তারপর আবার যেতে হলো অফিসে । তাতে কাজের কাজ কিছুই হলো না , আবার সেই একই রকম গেলো দিনটা ।


প্রথমত , আপনি চিন্তা করবেন আপনার সময় নাই , কিছু সময় আছে যা দিয়ে আপনি ঘরের কিছু টুকটাক কাজ করবেন । সুতরাং আপনার দিন আবার আগের মতই যাবে । আপনার শরীরের যত্ন নেয়া হবে না , পরিবারকেও সময় দেয়া হবে না ।

দ্বিতীয়ত , আপনি চিন্তা করলেন যাই হোক , আপনি যেভাবেই হোক দিনের কাজ দিনে শেষ করে ফেলবেন । কাজের সময় সামাজিক মাধ্যমে ঢু মারবেন না । সময় নষ্ট করবেন না । একদম সময়মাফিক চলবেন । বাসায় এসে পরিবারকে সময় দিবেন । রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাবেন । সকালে ব্যায়াম করবেন । অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ কাজের ফাকে যদি কিছুটা অবসর সময় পাওয়া যায় তবেই সামাজিক মাধ্যমে সময় দিবেন । কিছুটা সময় গান দেখবেন অথবা আপনার শখের কাজটা করবেন । শরীর , মন সবই ভালো থাকবে যদি সময়মাফিক চলেন । এভাবেই জীবনের সফলতা আসতে পারে ।

সুতরাং আজকের কাজ আজকেই করুন যতটুকু সুযোগ আশা করেছিলেন , যদি তারচেয়েও কম পেয়ে থাকেন ।


সময়মাফিক কাজ কিভাবে করা যায় তার জন্য কিছু পরামর্শ


বর্তমানে সবাই কম বেশি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন । সেখানে সময়মাফিক চলার জন্য হাজারটা Time management apps পাওয়া যায় । তার কোনটা ব্যাবহার করে প্রতিদিন কি কি কাজ তা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য Reminder ব্যবহার করতে পারেন । সেখানে তালিকা করে করে দিনের কি কি কাজ করতে হবে তার Reminder বানিয়ে ফেলতে পারেন । আসলে আমার ক্ষেত্রে এই সময়মাফিক চলার ব্যাপারটা আরো সহজ হয় যদি আপনি আপনার কাজের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন । তখন এমনিতেই সময়মাফিক চলতে পারবেন ।

তারপরও তিনটি জিনিসের উপর আবার নজর দেই …
১- সকল অর্ধ-সমাপ্ত কাজ একবারে বসেই শেষ করা । অন্য কোন কিছুর দিকে না তাকিয়ে ।

২- গুরুত্বপূর্ণ কাজ সবার আগে আগে শেষ করে ফেলা ।

৩- নিজের সময়সূচি আকড়ে ধরে থাকা এবং তা অনুসরন করার অভ্যাস করা তা যত ছোট কাজই হোক না কেন ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্পর্ক ভাঙ্গার ১০১ উপায়

মানিব্যাগটা হাতে নিতেই বুঝতে পারলাম এখান থেকে বেশ কিছু টাকা হাত সাফাই হয়েছে। গুনে দেখি দুইশো টাকা মতো গায়েব। আমার মানিব্যাগ থেকে টাকা গায়েব...